পাকিস্তান সরকার ফ্রান্স হতে ২টি সাবমেরিন কিনেছিল। সাবমেরিন ২টি ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ ট্রেনিং শেষ করে ১লা এপ্রিল পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিদেশী গ্ণমাধ্যম ২৫মার্চ রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া হত্যা যজ্ঞের সংবাদ গুরুত্ব সহকারে প্রচার হয়। এই সংবাদ শুনে তুলনে অবস্থানরত বাঙ্গালী নাবিকেরা খুবই উদবিন্ন হয়ে পড়ে এবং পাকিস্তানে ফেরত আসার বিষয়ে দবিধান্ধিত হয়ে পড়ে। তারা বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারে পুর্ব পাকিস্তানে বাঙ্গালী সামরিক ও বেসামরিক জনগণ পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২৬মার্চ জেনারেল ইয়া-হিয়ার ভাষন শুনে তাদের মাঝে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। তারা মুক্তি যোদ্ধের পক্ষে কিছু করার জন্য গোপনে বৈঠক করে। ১৩জনের মধ্যে ৯জন পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেন। এবং ৩১ মার্চ রাত ১১ টায় পালিয়ে মুক্তি যুদ্ধের উদ্দ্যেশে ফ্রান্সের তুলন থেকে যাত্রা শুরু করেন। তাদের প্রথম অপারেশন- ‘অপারেশন জেকপট ১৯৭১ সালের ১৮ আগষ্ঠ’। আমার পুতুল যাবে শ্বশুর বাড়ী- রেডিও এর গানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত ২৩টি পাকিস্থানী জাহাজকে ধ্বংস করে। বন্দর সেদিন ভয়াবহ শব্দে কেঁপে উঠে। বন্দর অচল হয়ে যায়। এর পর হতে দেশের বিভিন্ন সমু্দ্র ও নদীবন্দরে তাদের অপারেশ্নের ফ্লে পাস্কিস্থানী বাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে। পাকিস্থানীদের সদ ও অস্ত্র বন্দরে ভিরতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়ে। কমান্ডো বাহিনীর হেডকোয়াটার করা হয়েছিল ভারতের পলাশীতে।এই হেডকোয়াটারে অপারেশন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল আব্দুর রকিব মিয়া। ২৫ অক্টোবর ১৯৭১ সাল। ফুলছ্রিবাদ ঘাটে ৩টি অস্ত্র ও রসদ র্ভতি জাহাজের সংবাদ কমান্ডো হেডকোয়াটারে পৌঁছালে আব্দুর রকিব মিয়া ৮জন কমান্ডো নিয়ে পলাশী হতে ফুলছ্রি ঘাটে আসে। জাহাজ ৩টি ফুলছড়িবাদ ঘাটের পুর্বপাড় জগন্নাথগঞ্জ ঘাটে নোংগর করা ছিল। উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে ৫কিমি প্রশস্ত যমুনা নদীতে অপারেশনের উদ্যেশে বুকে মাইন বেঁধে সাতার কাটতে শুরু করে। আব্দুর রকিব যখন জাহাজের কাছাকাছি পৌঁছান ঠিক তখনই জাহাজ যাত্রার উদ্যেশে রওনা করে। ফলে বুকে বাঁধা মাইন ফেটে রকিব সহ ৮জন কমান্ডো শাহাদত বরন করেন। সাথে জাহাজও ধ্বংস হয়। মুক্তি যুদ্ধে বীরপুর্ণ ভুমিকা পালনের জন্য তাকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভুষিত করা হয়। তার এই আত্মত্যাগ এবং দুঃসাহসীকতা তুলনাহীন।
তথ্য –
উইং কমান্ডোর হামিদুল্লাহ (বীর উত্তম)
কর্নেল নুরুন্নবী খান (বীর বিক্রম)